যে ৫টি কারণে আপনার ফেসবুক অ্যাড একাউন্ট ডিজেবল হয়ে যেতে পারে

আপনি কি জানেন ঠিক কি অব কারনে আপনার অ্যাড একাউন্ট বন্ধ হয়ে যাচ্ছে? দুইটা কারনে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে

  • ফেসবুকের রুলস ভঙ্গ করার জন্য
  • মেশিন লার্নিং এর জন্য ফেসবুক ভুল করে বন্ধ করে দিচ্ছে

মেশিন লার্নিং এর জন্য যেটা বন্ধ হচ্ছে, সেটা নিয়ে তো কিছু বলার নাই, এতোটুকুই বলবো দুঃখজনক ব্যাপারটা, তবে এখানে আপনি রিভিউ রিকুয়েস্ট করলে অথবা কাস্টোমার কেয়ারে লাইভ চ্যাট অথবা ইমেইল করলে আশা করা যায় আপনার অ্যাড একাউন্ট ফিরে পাবেন।

আজকের আলোচনা প্রথম পয়েন্ট নিয়ে, ফেসবুকের কোন সব রুলস ভঙ্গ করার কারনে মূলত অ্যাড একাউন্ট বন্ধ হয়ে যায়।

বারবার পেমেন্ট ফেইল হয়ে যাওয়া

ফেসবুকে বিভিন্ন ভাবে পেমেন্ট করা যায়

  1. ফেসবুকে একটা থেরাসহোল্ড লিমিট থাকে সেটা রিচ করলে ফেসবুক অটো আপনার কার্ড থেকে টাকা কেটে নিবে।
  2. থেরাসহোল্ড লিমিট যদি চলতি মাসের মধ্যে শেষ না হয় তাহলে যাই ই আপনি স্পেন্ট করেন না কেন সেটা মাসের শেষে ফেসবুক কেটে নিবে
  3. আপনি যে কোন সময় ম্যানুয়ালি ফেসবুকে পেমেন্ট করতে পারবেন।

পেমেন্ট ফেল কিভাবে হয়, খুব সিম্পল, ফেসবুকের যখন টাকা কাটার সময় হয়, আর সে টাকা কাটতে গিয়ে যদি দেখে আপনার কার্ডে টাকা নেই, অথবা অন্য কোন সমস্যা আছে তাহলে আপনার অ্যাড একাউন্ট বন্ধ করে দিবে, আপনি একাউন্ট স্যাটল করে, পেমেন্ট করে আবার অল্প সময়ের মধ্যে আপনার অ্যাড একাউন্টের সব অ্যাড রান করতে পারবেন এবং নতুন অ্যাডও দিতে পারবেন, তবে এটা যদি বারবার হতে থাকে তাহলে ফেসবুক আপনার অ্যাড একাউন্ট ডিজাবল করে দিতে পারে।

আরো জানুন:

কি করনীয়

আপনার বর্তমান থেরাসহোল্ড কত চেক করবেন, মানে ফেসবুক আপনার পরবর্তী বিল কত টাকা স্পেন্ট হলে কাটবে সেটা চেক করবেন এবং আপনার অ্যাডের স্পেন্ট সেই আমাউন্টে যাবার আগেই নিশ্চিত করবেন যে আপনার কার্ডে যথেষ্ট পরিমানে টাকা আছে, অথবা আপনি থেরাসহোল্ড লিমিট রিচ করার আগেই ম্যানুয়ালি পেমেন্ট করে দিতে পারেন যে কোন এমাউন্ট, যে কোন সময়।

ফেসবুক পেজের মান ভালো না হলে

বারবার কমিউনিটি গাইডলাইন ভঙ্গ করলে আপনার পেজের quality score কমে যাবে, যেটা আপনার অ্যাড এবং অ্যাড একাউন্টের উপর প্রভাব ফেলতে পারে। ফেক নিউজ শেয়ার করা, আনসোশ্যাল ব্যবহার, পেজের সাথে যায় না এরকম প্রোডাক্ট অথবা সার্ভিস অফার করা ইত্যাদি কারনে আপনি ব্যান হতে পারেন, আপনার পেজ অ্যাড দেয়া থেকে রেস্ট্রিক্টেড হতে পারে, আপনার অ্যাড একাউন্ট ব্যান হতে পারে।

See also  ফেসবুক পোস্ট নিয়ে চমৎকার কিছু আইডিয়া

কি করনীয়

সবার আগে ফেসবুক কমিউনিটি গাইডলাইনটা খুব ভালোভাবে পড়া লাগবে এবং সেখানে যেভাবে বলা হয়েছে সেভাবে কাজ করতে হবে, তবে মনে রাখবেন ফেসবুক কমিউনিটি গাইডলাইন আর অ্যাড পলিসি এক ব্যাপার না, আর আপনাকে দুইটাই ভালো মত পড়তে হবে, বুঝতে হবে।

আপনার পেজের কোয়ালিটি চেক করুন

আপনার পেজের পেজ কোয়ালিটি চেক করতে চাইলে আপনার পেজের বাম সাইডবারে “Page Quality” তে ক্লিক করে দেখতে পারেন। এখানে গেলে আপনি দেখতে পারবেন আপনার পেজ ঠিক আছে নাকি কোন সমস্যা আছে।

ফেসবুক অথবা ইন্সটাগ্রাম অ্যাডের কোয়ালিটি স্কোর লো হবার কারনে

আপনার অ্যাডের স্কোর মূলত নির্ধারণ হয় আপনার অ্যাড সঠিকতা এবং আপনার প্রোডাক্ট অথবা সার্ভিস অনুযায়ী সঠিক দর্শক আপনার অ্যাড দেখছে কিনা সেটার উপর, আপনার অ্যাড এপ্রুভ হলো কিন্তু মান খারাপ হবার আপনার অ্যাড একাউন্টের উপর প্রভাব পড়তে পারে অথবা এরকম অ্যাড দিনের পর দিন দিতে থাকলে একসময় ফেসবুক আপনার অ্যাড একাউন্ট অথবা পেজ ব্যান করে দিতে পারে।

কি করনীয়

– অবার প্রথমে লক্ষ্য রাখতে হবে যে আপনি যে কন্টেন্ট দিয়ে অ্যাড বানাচ্ছেন এটার মান ঠিক আছে কিনা, ছবির রেজুলেশন ঠিক আছে কিনা, কপিরাইট ফ্রি কিনা ইত্যাদি। এরপর যখন অ্যাড রান হবে আপনি মিনিমাম ৫০০ ইম্প্রেশন হলেই অ্যাড ম্যানাজারের অ্যাড লেভেল থেকে( তৃতীয় স্টেপ) থেকে “Quality ranking” চেক করবেন, এখানে ৩ ভাবে র‍্যাঙ্ক করা হয় “Above Average”, “Average”, “Below Average”.

এই ৩টা স্কোরের মধ্যে “Above Average” খুব ভালো স্কোর, “Average” মোটামুটি ভালো, কিন্তু আপনি যদি দেখেন আপনার অ্যাডের কোয়ালিটি রাঙ্ক “Below Average” এ চলে গেছে তাহলে আপনাকে অ্যাড এডিট করতে হবে অথবা নতুন অ্যাড শুরু করতে হবে।

ল্যান্ডিং পেজের মান ভালো না হলে

এটা মুলত আপনি আপনার অ্যাডে কোন ওয়েবাইটের লিঙ্ক প্রোভাইড করলে আর সেই ওয়েবসাইটের পেজের মান ভালো না হলে সেটা অ্যাড এবং অ্যাড একাউন্টের উপর প্রভাব ফেলতে পারে, যেমন আপনি অ্যাডের আপনার ওয়েব সাটের লিঙ্ক দিলেন যেখানে ক্লিক করে ইউজার প্রবেশ করবে সেখানে যদি এমন কন্টেন্ট থাকে যেটা ফেসবুকের নিয়মের বাইরে তাহলে আপনার অ্যাড রিজেক্ট, অ্যাড একাউন্ট ব্যান হতে পারে, অনেক বেশি অ্যাড, অনেক বেশি পপ আপ বক্স ইত্যাদি কারনেও আপনার অ্যাড একাউন্ট সম্যসার সম্মুখীন হতে পারে।

See also  ফেসবুক মার্কেটিং এর বেসিক ধারনা, প্রয়োজনীয়সম্পূর্ণ গাইড

কি করনিয়

আপনি ফেসবুক ডিবাগার টুল দিয়ে চেক করে নিতে পারেন আপনি যে URL ব্যবহার করছেন অথবা করবেন সেখানে কোন সমস্যা আছে কিনা।

যেমন আপনার ল্যান্ডিং পেজে কিভাবে আপনি আপনার ওজন কমাবেন এরকম একটা কন্টেন্ট আছে যেটা ফেসবুক পলিসির বাইরে তাহলে আপনি সেই কন্টেন্ট রিমুভ করে আপডেট করে নিলে আর সমস্যা হবে না, আপনি ডিবাগার টুলের মাধ্যমে আপনি চেক করে নিতে পারবেন আপডেটগুলো।

বারবার ফেসবুকের অ্যাড পলিসি ভঙ্গ করা

প্রায় সব অ্যাডভার্টাইসার এরকম সমস্যার সম্মুখীন হয় যে একটা অ্যাড দেয়ার পর সেটা রিজেক্ট হয়ে যায়, কিন্তু এটা যদি নিয়মিত ভাবে হতে থাকে তাহলে আপনার অ্যাড একাউন্ট বন্ধ হয়ে যাবার সমূহ সম্ভাবনা থাকে। আপনি এখানে কোন রিস্ক নিতে পারেন না আসলে, বলতে পারেন না “দেখি না দিয়ে কি হয়, রিজেক্ট তো নাও হতে পারে” এরকম করতে থাকলে আর অ্যাড বারবার রিজেক্ট হতে থাকলে আপনার অ্যাড একাউন্ট বন্ধ হয়ে যাবে।

কি করনীয়

প্রথমেই আপনাকে ফেসবুকের কমিউনিটি গাইডলাইন পড়তে হবে এ অনুযায়ী পোস্ট দিতে হবে এরপর অ্যাড পলিসি ভালো মতন পড়ে অ্যাড দিতে হবে, আপনার যদি এই দুইটা জিনিস জানা না থাকে তাহলে আপনি বিপদে পড়তেই পারেন।

অ্যাড পলিসি ভায়োলেশন রিভিউ করতে পারবেন

এখন আপনি অ্যাড ম্যানাজার থেকে “Account Quality” তে গিয়ে চেক করতে পারবেন আপনার বর্তমানে রিজেক্ট অ্যাড এর পিছনে কি কারন এবং আগে যে অ্যাডগুলা অ্যাড রিজেক্ট হয়েছে সেগুলা কি কারনে হয়েছে, যা আপনাকে পরবর্তী অ্যাড দেয়ার ক্ষেত্রে সাহায্য করবে।

উপসংহার

ফেসবুক কমিউনিটি গাইডলাইন, এবং ফেসবুক অ্যাড পলিসি ভালো মত পড়লে আপনি ফেসবুকের অনেক খুঁটিনাটি ব্যাপার জানতে পারবেন, যেটা হয়তো আপনি চিন্তাই করেন নাই দেখবেন এরকম অনেক কিছু দেয়া আছে যেমন “fat loss,” “lose weight, “mortgages” এই সব শব্দ ব্যবহার করলেও অনেক সময় অ্যাড এপ্রুভ হয় না, অনেক সময় সবগুলা লেখা বড় হাতের লিখলে অ্যাড এপ্রুভ হয় না। আপনি ছবিতে “Before” “After” করে দেখালে অ্যাড রিজেক্ট হতে পারে, এরকম আরো অনেক নিয়ম আছ যেগুলা আপনি তাদের পলিসি, গাইডলাইন পড়লে ভালোভাবে বুঝতে পারবেন। তাই পলিসি আর গাইডলাইন পড়া, জানা একরকম বাধ্যতামূলক বলা যায় যারা ফেসবুক নিয়ে কাজ করেন।

See also  ব্র্যান্ডিং কি এবং কোম্পানির বা ব্যবসার জন্য কেন এটি গুরুত্বপূর্ণ?

এখন ব্যাপার টা যদি এমন দাঁড়ায় আপনার অ্যাড প্রায়ই রিজেক্ট হয়ে যাচ্ছে তার মানে বুঝতে হবে আপনি ফেসবুকের “naughty” লিস্টের মধ্যে পড়ে গেছেন, এটার মানে হচ্ছে আপনি এখন আপনার আগের করা ভুলের জন্য গভীর তদন্তের মধ্যে আছেন।

এটা একটা সুখবর যে আপনি পেজ কোয়ালিটি, একাউন্ট কোয়ালিটি দেখে অনেক কিছু বুঝতে পারবেন কোথায় ভুল হচ্ছে, কি করা উচিৎ এখন আপনার।

ফেসবুক সবসময় বলে আসছে তারা তাদের ইউজার এক্সপিরিয়েন্স নিশ্চিত করতে চায় যারা বিজনেস করছে তাদের জন্য রুলস বানিয়ে দিয়েছে এবং বলছে ভালো মানের কন্টেন্ট নিয়ে কাজ করার জন্য, এবং যাদের জন্য প্রোডাক্ট এবং সার্ভিস তারাই যেন সেটা দেখে। তাই আপনার ব্যবসা যেন ক্ষতির সম্মুখীন না হয় সে জন্য আপনাকে তাদের পলিসির সাথে পরিচিত থাকতে হবে এবং সেগুলা মেনে চলতে হবে তাহলেই আপনার ব্যাবসা থাকবে সুরক্ষিত।

Leave a Comment